Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • অন্যান্য
  • English
The Business Standard বাংলা
tbs
THURSDAY, JULY 07, 2022
THURSDAY, JULY 07, 2022
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • অন্যান্য
  • English
শান্তি কিন্তু শান্তি নয়! নতুন স্নায়ুযুদ্ধ কি আসন্ন?

ইজেল

জান্নাতুল নাঈম পিয়াল
18 December, 2021, 05:00 pm
Last modified: 18 December, 2021, 05:22 pm

Related News

  • চীনের নেতৃত্বাধীন বাণিজ্য জোটে সম্ভাবনা থাকলেও, পাশাপাশি কিছু সতর্কতারও দরকার
  • অস্ত্র সংবরণ চুক্তির মৃত্যু হয়েছে, এসেছে প্রতিযোগিতার যুগ
  • এক দশক ধরে উইকিপিডিয়ায় কোটি কোটি শব্দের ভুয়া রুশ ইতিহাস লিখেছেন ‘চীনা বোর্হেস’
  • নতুন রিজার্ভ মুদ্রা দিয়ে ডলারের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চায় রাশিয়া-চীন
  • চীনের কৌশলগত প্রভাবকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার সংকট

শান্তি কিন্তু শান্তি নয়! নতুন স্নায়ুযুদ্ধ কি আসন্ন?

‘স্নায়ুযুদ্ধ’ কথাটির জনক কিন্তু এক বিখ্যাত লেখক। তিনি জর্জ অরওয়েল। ১৯৪৫ সালের অক্টোবরে, যখনও মার্কিন-সোভিয়েত দ্বন্দ্বের দৃশ্যমান সূচনা ঘটেনি, তখনই অরওয়েল ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ কথাটির প্রথম ব্যবহার করেন।
জান্নাতুল নাঈম পিয়াল
18 December, 2021, 05:00 pm
Last modified: 18 December, 2021, 05:22 pm

অনেক বুদ্ধিজীবী ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞই এ ব্যাপারে নিঃসংশয় যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি নতুন স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে, অথবা ইতোমধ্যেই সেই স্নায়ুযুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। তাদের বিশ্লেষণ মোতাবেক, দুই পারমাণবিক পরাশক্তির পরস্পরবিরোধী আদর্শ এবং দ্বিমুখী কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতাই রয়েছে এই স্নায়ুযুদ্ধের নেপথ্যে। 

তারা আরো বিশ্বাস করেন, এই নতুন স্নায়ুযুদ্ধ অনেকটা মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধেরই পথ অনুসরণ করবে, যেখানে দুই পক্ষেরই লক্ষ্য থাকবে বৈশ্বিক নেতৃত্বের ঝাণ্ডা নিজেদের দখলে নিয়ে আসার, এবং বিশ্বের প্রতিটি দেশকে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ—গণতন্ত্র অথবা স্বৈরতন্ত্র। 

কিন্তু তারপরও এ যুদ্ধ 'ঠান্ডা'ই রয়ে যাবে, কেননা দুপক্ষের কেউই চায় না, অথবা অদূর ভবিষ্যতেও চাইবে না, সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সম্মুখসমরে লড়াইয়ে নামতে। বস্তুত, যুক্তরাষ্ট্র-চীন নতুন স্নায়ুযুদ্ধ প্রাথমিকভাবে আবর্তিত হবে অর্থনৈতিক, প্রাযুক্তিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে।

তবে উপরিউক্ত ধারণার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারী একটি দলও কিন্তু রয়েছে। সেই পর্যবেক্ষকরাও সমান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা দিয়েছেন, কোনো নতুন স্নায়ুযুদ্ধ আসবে না, কেননা ওয়াশিংটন ও বেইজিং আদতে বৈশ্বিক আধিপত্য কায়েমের জন্য আদর্শিক যুদ্ধে লিপ্ত নয়। চীন গোটা বিশ্বের নেতৃত্ব কিংবা পুঁজিবাদের বিনাশ চায় না। আমেরিকান জীবনধারার প্রতিও তাদের কোনো সর্বব্যাপী বিধ্বংসী মনোভাব নেই। এদিকে বাকি বিশ্বও নিজেদেরকে আমেরিকান ও চীনা শিবিরে বিভক্ত করবে না, যেমনটি ঘটেছিল প্রথম স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে। 

রাশিয়ায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইকেল ম্যাকফল যেমন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করা সঙ্গত নয়, কেননা এতে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধরনের ব্যাপারে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থেকে যায়। 

ইতিহাসবিদ মেলভিন লেফলারও বলেছেন, "স্নায়ুযুদ্ধ ঘটেছিল ১৯৪৫-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উদ্ভূত নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতির কারণে। কিন্তু বর্তমানে যে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত হয়, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষমতার ছে প্রচলন রয়েছে, এবং বিরোধী পক্ষের শাসনের ব্যাপারে যে আদর্শিক আবেদন রয়েছে, তার সবই একদম ভিন্ন।"

যুক্তরাষ্ট্র-চীন নতুন স্নায়ুযুদ্ধের ব্যাপারে এই যে মতামতের বিভেদ, এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে কে কোন পক্ষাবলম্বন করবে তা আসলে নির্ভর করছে 'স্নায়ুযুদ্ধ' কথাটিকে কে কীভাবে ব্যাখ্যা করছে তার উপর। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধই হলো একমাত্র ভূতপূর্ব ঘটনা, যেটিকে অনুসরণ করে আমরা আমাদের ব্যাখ্যার একটি নিজস্ব কাঠামো দাঁড় করাতে পারি।

অনেকেই হয়তো জানেন না, 'স্নায়ুযুদ্ধ' কথাটির জনক কিন্তু এক বিখ্যাত লেখক। তিনি জর্জ অরওয়েল। ১৯৪৫ সালের অক্টোবরে, যখনও মার্কিন-সোভিয়েত দ্বন্দ্বের দৃশ্যমান সূচনা ঘটেনি, তখনই অরওয়েল 'স্নায়ুযুদ্ধ' কথাটির প্রথম ব্যবহার করেন। একে তিনি সংজ্ঞায়িত করেন খুবই সহজভাবে, "a peace that is no peace" বলে। যে শান্তি আদতে শান্তি নয়—বিরোধের এমন এক রূপ যেখানে কেবল সশস্ত্র সংঘাতই অনুপস্থিত।

'স্নায়ুযুদ্ধ' কথাটির জনক জর্জ অরওয়েল। ছবি: বিবিসি

এবার যদি আমরা যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বিরোধের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি, তাতে কিন্তু অরওয়েলের বেঁধে দেওয়া মানদণ্ডের সঙ্গে তা খুব সহজেই খাপ খেয়ে যায়। যদিও বেইজিং বৈশ্বিক কর্তৃত্ব, গণতন্ত্রের ইতি কিংবা পুঁজিবাদের ধ্বংস চায় না, তবু তারা ঠিকই তাদের 'চীনা বৈশিষ্ট্যের সমাজতান্ত্রিক' সরকার ব্যবস্থাকে বৈশ্বিকভাবে জায়েজ করতে চাইছে। 

তাছাড়া চীন তাদের সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তিকেও যথাসম্ভব বাড়াতে চাইছে; বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের মতো করে। এতদিন যুক্তরাষ্ট্রই ছিল বৈশ্বিক সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তির শেষ কথা। সেখানে ঠিক একই আকাঙ্ক্ষা যদি অন্য কোনো দেশও লালন করে, এবং সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সেই দেশটির ঠোকাঠুকি তো হবেই!

বেইজিংও তাই মনে করছে, ওয়াশিংটন নিয়ন্ত্রণের একটি ডি ফ্যাক্টো পলিসি গ্রহণ করেছে, যেন চীনের বৈশ্বিক প্রভাব বৃদ্ধির গতিতে রাশ টেনে ধরা যায়। ফলে চীনা নেতারা এখন চাইছেন, যে করেই হোক চীনের অগ্রযাত্রার পথে যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতাকে গুঁড়িয়ে দিতে। তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর দুর্বলতারও ফায়দা লুটতে চাইছেন।

এতে করে দুটো ব্যাপার ঘটছে। দুই বৈশ্বিক পরাশক্তির মধ্যে আন্তর্জাতিক প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে একটি পদ্ধতিগত আদর্শিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেমন দেখা যাচ্ছে, তেমনই আবার গঠনতান্ত্রিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাও উঁকি মারছে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার জিরো-সাম হওয়ার প্রয়োজন না পড়লেও, দুই পক্ষই মরিয়াভাবে সে পথে হাঁটছে, এবং সেজন্য পরস্পরকে দায়ীও করছে। অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও প্রাযুক্তিক খাতে উন্নতির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দুটি দেশই, কেননা স্পষ্টতই তারা বিশ্বাস করে এটি তাদের নিজ নিজ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আবশ্যক, এবং পরস্পর নির্ভরশীল হওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ই একে অন্যের সামরিক সক্ষমতাকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, আর সেটির নেপথ্যে থাকছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার অভিসন্ধি। কোনো তৃতীয় পক্ষকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সামরিক বচসাও মাথাচাড়া দিচ্ছে। সামরিক শক্তিকে অদৃশ্যমান অথচ কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে অধিষ্ঠিত করে তারা রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বাদ যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ব্যবস্থার ব্যাপারেও পরস্পরের সজাগ দৃষ্টিপাত। যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। এদিকে বেইজিংয়ের বিশ্বাস, ওয়াশিংটন সিসিপিকে বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক ষড়যন্ত্র আঁটছে।

শি জিনপিং ও জো বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত

এই সকল উদাহরণ থেকে একটি বিষয়ই প্রমাণ হয়, তা হলো দুই পক্ষের মধ্যে পরস্পরের প্রতি কৌশলগত সহানুভূতির অভাব। বেইজিং ও ওয়াশিংটন কেউই বিপরীত পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গিকে বুঝতে পারে না বা বুঝতে চায় না। এই ব্যাপারটিরই প্রতিফলন ঘটেছে দুই দেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক কূটনৈতিক বিনিময়ে। সেখানে দুই পক্ষই অপর প্রান্তের মানুষটির কথায় কর্ণপাত না করে নিজেদের মতো করে আলাপ চালিয়ে গেছে, এবং পরস্পরের ভাষা নিয়ে কটাক্ষ করেছে। এরকম পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাসের অভাবই দুই দেশের কৌশলগত উদ্দেশ্যকে আরো প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। 

আগুনে আরো ঘি ঠেলেছে দুই পক্ষেরই বিশ্বাস যে চলমান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারাই এগিয়ে রয়েছে। ওয়াশিংটন যেমন বারবারই বলছে, চীনের সঙ্গে বিরোধের বিষয়টিকে তারা সামলাবে 'শক্তির জায়গা থেকে'। অন্যদিকে চীনা নেতারা সোজাসাপটাভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে শান্তিপূর্ণ সংলাপের পরিস্থিতিকে। তাছাড়া বেইজিং হিসাবনিকাশ করে এই সিদ্ধান্তেও এসেছে যে, চীনের উত্থান ও যুক্তরাষ্ট্রের পতন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যেখানে তাদের পক্ষে যেকোনো মার্কিন চাপ সামলানো তো বটেই, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রকেও নিজেদের অঙ্গুলিহেলনে নাচানো সম্ভব। এভাবে উভয়পক্ষই নিজেদের ক্ষমতার ব্যাপারে অতিআত্মবিশ্বাসে ভুগছে, এবং নিজেদের কোনো দুর্বলতাই তাদের নজরে আসছে না। 

বলাই বাহুল্য, দুই দেশই ভুল। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, দুই দেশই আভ্যন্তরীণভাবে নানা সমস্যায় জর্জরিত। একে অন্যের চেয়ে এগিয়ে থাকতে গিয়ে তারা নিজেদের মৌলিক সমস্যাগুলোকেই পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। অথবা নিজেদের মজ্জাগত সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চায় না বলেই, পারস্পরিক মতভেদকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বড় করে দেখাচ্ছে। আবার এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ভেতরের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর ফলেই আসন্ন নতুন স্নায়ুযুদ্ধকে অপেক্ষাকৃত বেশি অবশ্যম্ভাবী বলে মনে হচ্ছে। 

যদি আমেরিকান দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণের চেষ্টা করি, তারা যে চীনকে সোভিয়েত-ঘরানার হুমকি বলে মনে করছে, এটি মূলত তাদের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, মেরুকরণ ও অর্থনৈতিক অস্বস্তির ফসল। গত কয়েক দশক ধরেই এই সমস্যাগুলো ডালপালা মেলছিল, কিন্তু ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি ও করোনাভাইরাস মহামারি এসে এদেরকে আরো গতিশীল করেছে। সম্ভবত এসব সমস্যাই ধিকিধিকি করে জ্বলতে থাকা একটি জাতিগত অনিরাপত্তাবোধকে এবার দাবানলের মতো গোটা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বহির্শক্তি, বিশেষত চীনের কাছে, বিশ্বাঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের হেনস্থা হওয়ার ভয়টা গড়পড়তা আমেরিকানদের মনে জেঁকে বসেছে। সেই ভয়কেই নিজেদের অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে দেশটির নেতৃস্থানীয়রাও। 

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার পেছনে চীনের আগ্রাসী বাণিজ্য নীতিকে দায়ী করা ছাড়াও, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্যকেও আমেরিকান গণতন্ত্রের জন্য চোখরাঙানি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। চীনের মহাকাশ ও সাইবার সক্ষমতাকেও ভাবা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার বড় হুমকি। 

তবে বাইডেন প্রশাসন কিন্তু নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের উপর চীনের হুমকিকে বিশ্লেষণ করছে না। কেননা তাদের মনে ভয় রয়েছে, এতে করে রিপাবলিকানরা তো বটেই, এমনকি অনেক ডেমোক্র্যাটও তাদেরকে 'নরম' বলে মনে করতে পারে। চীনবিরোধী সেন্টিমেন্ট এতটাই সুউচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, স্রোতের বিপরীতে গিয়ে 'প্রকৃত বাস্তবতা' উদঘাটনের চেষ্টা করা হবে বাইডেন প্রশাসনের জন্য নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার সামিল। 

২০২১ সালে শতবর্ষে পৌঁছেছে চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি)। ছবি: সংগৃহীত

এবার যদি চীনাদের দিক দিয়ে ভাবি, যুক্তরাষ্ট্রকে তারা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করে দিনের পর দিন ধরে চলে আসা যুক্তরাষ্ট্রের সেই নীতিমালার কারণে, যেটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছে বেইজিংয়ে সরকার বদলের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সব প্রচেষ্টার কারণে সিসিপির নেতারাও যেন হাতে পেয়ে গেছে ঈদের চাঁদ। যুক্তরাষ্ট্র যে আসলেই তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু, এই ধারণাটিকে তারা পৌনঃপুনিক প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে 'ধ্রুব সত্য' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে।    

এরকম পরিস্থিতিতে, শি জিনপিংসহ এবং সিসিপির নেতৃত্বে থাকা তার সহকর্মীদেরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো প্রকার সমঝোতা বা ইতিবাচক সম্পর্ক স্থাপনের কারণ নেই। কেননা তারা ভাবছে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তারা বন্ধুভাবাপন্ন মনোভাব পোষণ করে, তবে নিজ দেশের মানুষ তাদেরকেও 'নরম' ভাবতে শুরু করে। 

তাছাড়া এ কথাও তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি বা বিবাদভঞ্জন করতে গিয়ে তারা বিশ্বব্যাপী তাদের বেড়ে চলা আকাশচুম্বী খ্যাতি ও প্রভাব-প্রতিপত্তিকে বিসর্জন দেবে না। ১৫০ বছর ধরে চীন যে স্বপ্ন দেখে এসেছে, আজ যখন সেটি সত্যি হওয়ার দোরগোড়ায়, তখন কেনই বা তারা পিছু হটবে!

তাই চীন পিছু হটছে না। বরং তারা হাঁকডাকের মাধ্যমে বিশ্বকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। মূলধারার কূটনীতিতে যেমন এই বিষয়টির ছাপ পড়ছে, তেমনই শি জিনপিংসহ তার দলের নেতাদের ভাষণ-লেখনীতেও বারবার উঠে আসছে সম্পদ ও ক্ষমতার জোরে "বৈশ্বিক ঘটনাক্রমের কেন্দ্র অভিমুখে এগিয়ে চলার" প্রসঙ্গ। 

অথচ প্যারাডক্সটা এখানেই যে, এতটা আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দুই দেশই কিন্তু তাদের কাজে ও কথায় অহেতুক ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করছে, যার মাধ্যমে তাদের অনিরাপত্তাবোধই চাক্ষুষ হচ্ছে। যতই আসন্ন নতুন স্নায়ুযুদ্ধের হাইপ তুলে বিশ্বগণমাধ্যমে কদিন পরপরই আলোড়ন তোলা হোক না কেন, তবু তাদের আভ্যন্তরীণ নানা ঝুট-ঝামেলার কথাও কিন্তু ঠিকই শিরোনামে আসছে ফলাও করে। অর্থাৎ শাক দিয়ে মাছ ঢাকার পর স্নায়ুযুদ্ধ দিয়ে নিজ নিজ দেশের জটিলতা, দুর্বলতা, ভঙ্গুরতাকে গোপন রাখা হয়ে উঠছে না যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের।

সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্পর্কে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে পারস্পরিক সহযোগিতা। প্রতিদ্বন্বিতার বিষয়টি যতই অনিবার্য হোক, সহযোগিতার বিষয়টি হবে চূড়ান্তভাবে প্রয়োজন। তা শুধু দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ এড়ানোর জন্যই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত রাখতেও।

তবে বাইডেন প্রশাসন সরাসরিই একাধিকবার বলে দিয়েছে, চীনের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাবনাটি তাদের কাছে সবসময়ই 'সেকেন্ডারি' ও 'প্রতিদ্বন্দ্বিতা অপেক্ষা কম গুরুত্বপূর্ণ' বিষয় হয়েই থাকবে। অবশ্য সম্ভাব্য সহযোগিতার ব্যাপারে বেইজিংকে কিছুটা আন্তরিকই মনে হয়। কিন্তু যতদিন ওয়াশিংটন ও বেইজিং উভয় পক্ষই পারস্পরিক দ্বিধাদ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস, অনাস্থা ঝেড়ে ফেলে এক পথের পথিক না হবে, ততদিনে তাদের মধ্যকার ব্যবধানটা কমবে তো না-ই, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্ফীত হতে থাকবে। 

তাহলে বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের কোথায় এনে দাঁড় করাচ্ছে? এমন এক জিরো-সাম প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামনে, যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুইটি পরস্পরবিরোধী আদর্শবাদী পরাশক্তি তাদের মধ্যকার লড়াই অব্যাহত রাখবে, এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাবে। তবে হ্যাঁ, ঢাল-তলোয়ার কিংবা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অন্যকে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে তারা আঘাত করবে না।  

অর্থাৎ, অরওয়েলের বলা সেই "a peace that is no peace"-এরই আরো একটি নজিরের দিকে ধাবমান যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক। আর সেই 'সম্পর্ক'কে আমরা 'নতুন স্নায়ুযুদ্ধ' ছাড়া কী-ই বা বলতে পারি!
 

Related Topics

টপ নিউজ

স্নায়ুযুদ্ধ / চীন / যুক্তরাষ্ট্র

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • হাজারো কোটি টাকার বিনিময়েও আবার ‘জ্যাক স্প্যারো’ হবেন না ডেপ!
  • ঘরে ঘরে জ্বর, ডা. এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শ 
  • ইভ্যালির কাছে ২৫ কোটি টাকার পণ্য আছে
  • এক জাপানির গলফ ক্লাবের টানেই যেভাবে দেশে শুরু হলো লেন্সের উৎপাদন 
  • বাংলাদেশ থেকে পোশাক কর্মী নিচ্ছে বুলগেরিয়া
  • নতুন রিজার্ভ মুদ্রা দিয়ে ডলারের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চায় রাশিয়া-চীন

Related News

  • চীনের নেতৃত্বাধীন বাণিজ্য জোটে সম্ভাবনা থাকলেও, পাশাপাশি কিছু সতর্কতারও দরকার
  • অস্ত্র সংবরণ চুক্তির মৃত্যু হয়েছে, এসেছে প্রতিযোগিতার যুগ
  • এক দশক ধরে উইকিপিডিয়ায় কোটি কোটি শব্দের ভুয়া রুশ ইতিহাস লিখেছেন ‘চীনা বোর্হেস’
  • নতুন রিজার্ভ মুদ্রা দিয়ে ডলারের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চায় রাশিয়া-চীন
  • চীনের কৌশলগত প্রভাবকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার সংকট

Most Read

1
বিনোদন

হাজারো কোটি টাকার বিনিময়েও আবার ‘জ্যাক স্প্যারো’ হবেন না ডেপ!

2
বাংলাদেশ

ঘরে ঘরে জ্বর, ডা. এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শ 

3
অর্থনীতি

ইভ্যালির কাছে ২৫ কোটি টাকার পণ্য আছে

4
অর্থনীতি

এক জাপানির গলফ ক্লাবের টানেই যেভাবে দেশে শুরু হলো লেন্সের উৎপাদন 

5
বাংলাদেশ

বাংলাদেশ থেকে পোশাক কর্মী নিচ্ছে বুলগেরিয়া

6
আন্তর্জাতিক

নতুন রিজার্ভ মুদ্রা দিয়ে ডলারের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চায় রাশিয়া-চীন

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab