বকেয়া ভর্তুকির পাহাড়; জ্বালানি, কৃষির ভবিষ্যৎ মেঘে ঢাকা

কৃষি ও বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া ভর্তুকির এক অন্তহীন চক্রে আটকা পড়েছে সরকার। কারণ এ দুই খাতে চলতি অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ ভর্তুকি দিয়ে আগের অর্থবছরের বকেয়া বরাদ্দ ভর্তুকি নিষ্পত্তি করতে হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া ভর্তুকি পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলের মিলিত নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় সমান। আর সার ও বিদ্যুৎ খাতে সম্মিলিত বকেয়া ভর্তুকি দুটি পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় সমান।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েক দফা দাম বাড়ানোর পরও সার ও বিদ্যুতের ভর্তুকি মেটাতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ করা টাকার পুরোটা চলে যাচ্ছে গত অর্থবছরের বকেয়া ভর্তুকির দায় মেটাতে। ফলে চলতি অর্থবছরে এ দুটি খাতে সৃষ্ট প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির প্রায় ৭২ শতাংশই বকেয়া রয়ে যাচ্ছে, যার পুরোটা আগামী অর্থবছরের বাজেটের বরাদ্দ দিয়েও সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও কৃষি খাতে মোট বরাদ্দ ৪৯ হাজার কোটি টাকার পুরোটা ব্যয় করলেও এ দুটি খাতে বকেয়া ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা।
আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এই দুটি খাতে বরাদ্দ থাকছে প্রায় ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু এই অর্থ দিয়ে চলতি অর্থবছরের বকেয়া পুরোটা পরিশোধ করা যাবে না।
ফলে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার ও বিদ্যুতে যে ভর্তুকির প্রয়োজন হবে, তার পুরোটাই বকেয়া থাকবে। এই দায় মেটাতে হবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বরাদ্দ থেকে।
যুদ্ধ ও টাকার অবমূল্যায়নে বিপুল বেড়েছে ভর্তুকি
কর্মকর্তারা জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সার, জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লার মূল্যবৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে গত অর্থবছরসহ চলতি অর্থবছরে এই দুটি খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি বেড়েছে।
সাধারণত কোনো একটি অর্থবছরের বাজেটে কোনো খাতে যে পরিমাণ ভর্তুকি রাখা হয়, তা দিয়ে ওই অর্থবছরের ভর্তুকি পরিশোধ করা হয়। কিন্তু অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে এই খাতে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ ও সারে যে ভর্তুকি বকেয়া রয়েছে, তা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় সরকারের ব্যয় বাড়ছে।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ১৮০ দিন মেয়াদে এলটিআর ঋণ (লোন অ্যাগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিট) নিয়ে ইউরিয়া সার আমদানি করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ডিলারদের কাছে সরবরাহ করে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সময়মতো ভর্তুকির টাকা ছাড় না পেলে কৃষি মন্ত্রণালয় তা বিসিআইসিকে পরিশোধ করতে পারে না। ফলে ব্যাংকের ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। এতে ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তিও দূর্বল হয়ে পড়ে।
গত ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ১৭ হাজার ৪৬ কোটি টাকা ভর্তুকি দাবি করে কৃষি মন্ত্রণালয়। কিন্তু ওই সময় পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করে ৭ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। বাকিটা বকেয়া রয়ে যায়।
অন্যদিকে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সার আমদানিতে চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ১০ হাজার ৭৩১ কোটি টাকার এলটিআর বিতরণ করে। সময়মতো তা পরিশোধ করতে না পারায় ২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকার এলটিআর মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়।
অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সর্বশেষ গত এপ্রিল পর্যন্ত সারের ভর্তুকি বাবদ ১৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরে বেসরকারি মাধ্যমে আমদানি করে ১৪ লাখ টন ইউরিয়া সার ভর্তুকির আওতায় ছাড় করা হবে। বেসরকারি আমদানিকারকরা দেশের সব উপজেলায় সার ডিলারদের কাছে সরকার-নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি করেন। আর ডিলাররা নিজে সরাসরি বা খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে কৃষকদের কাছে সরকার-নির্ধারিত ভর্তুকি মূল্যে সার বিক্রি করেন।
আমদানি ব্যয় ও আমদানিকারক ডিলারদের কাছে যে দামে বিক্রি করে, তার পার্থক্য সরকার ভর্তুকি হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমদানিকারকদের ঋণপত্র (এলসি) স্থাপনকারী ব্যাংক হিসাবে দিয়ে থাকে।
রামপাল, পায়রা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা
বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাঁচামালের জোগান নিশ্চিত করতে জ্বালানি বিভাগের কাছ থেকে গ্যাস, কয়লা, ডিজেল ও ফার্নেস তেল কেনে বিদ্যুৎ বিভাগ। সময়মতো ভর্তুকির টাকা না পেলে জ্বালানি বিভাগের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হয় বিদ্যুৎ বিভাগ। এতে জ্বালানি বিভাগের প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ সংকটে পড়ে এবং তারাও আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।
জ্বালানি তেল আমদানির বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় ইতিমধ্যে বিদেশি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশকে তেল সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিয়েছে বলে জ্বালানি বিভাগকে জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। অন্যদিকে, কয়লা সংকটের কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, এভাবে এক বছরের ভর্তুকির দায় পরের অর্থবছরের বাজেট থেকে পরিশোধ করতে হলে 'ফিসক্যাল ডিসিপ্লিন' নষ্ট হবে।
'এতে অর্থায়নের চ্যালেঞ্জও তৈরি হবে। আর সময়মতো ভর্তুকি পরিশোধ করতে না পারলে সাপ্লায়াররাও পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে সংকট দেখা দেবে,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আহরণ বাড়াতে না পারলে সরকারের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ আরও অনেক বাড়বে এবং ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়া বাড়বে। চলতি অর্থবছরে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
'ইউক্রেন যুদ্ধই একমাত্র কারণ নয়'
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু ভর্তুকিই বকেয়া হচ্ছে না, আমদানি বিল পরিশোধেও বিলম্ব হচ্ছে। এর ফলে পণ্য সরবরাহকারীরা রপ্তানি বন্ধ করার হুমকি দিয়াছে যা বড় আর্থিক ঝুঁকি তৈরি করেছে।
তিনি ভর্তুকি বৃদ্ধি ও ডলার সংকটসহ সব সমস্যার জন্যই শুধু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে 'অজুহাত হিসেবে দেখানো'র প্রবণতার সমালোচনা করেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, যুদ্ধের কারণে শুরুতে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার পর এখন আবার দাম কমছে। কিন্তু তার কোনো প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়ছে না।
কৃষি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির ধারা
২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা, গত অর্থবছর তা বেড়ে ৩১ হাজার ৮ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বেড়ে ৪০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে, ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে তা বেড়ে ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং চলতি অর্থবছরে সারে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বেড়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে মনে করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
২০২৩-২৩ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি খাতে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকতে পারে।
অন্যদিকে, চলতি অর্থবছর শেষে কৃষি খাতে বকেয়া ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বকেয়া থাকবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।
অর্থাৎ আগামী অর্থবছরের বাজেটে এ দুটি খাতে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা পুরো অর্থ ছাড় করা হলেও চলতি অর্থবছরের ভর্তুকির দায় পুরোটা পরিশোধ হবে না।
সংকটে বিদ্যুৎ খাত
আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি বাবদ প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। কিন্তু এই অর্থ দিয়ে আগামী অর্থবছরের কোনো ভর্তুকির দায় মেটানো সম্ভব হবে না। কারণ চলতি অর্থবছরের ১১ মাসের ভর্তুকির বকেয়া দায় সৃষ্টি হয়েছে, যার পরিমাণ আগামী অর্থবছরের বরাদ্দের তুলনায় বেশি হতে পারে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি বাড়িয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। অর্থ বিভাগ প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ১ হাজার কোটি টাকা ও শেষ সপ্তাহে ১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বাবদ ছাড় করছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত ভর্তুকির বকেয়া পরিশোধ হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ভর্তুকির দাবি এসেছে, যার মধ্যে ৩ হাজার কোটি টাকা এখনও বকেয়া আছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এবং আগামী জুনের প্রথম ও শেষ সপ্তাহে তিন কিস্তিতে এই টাকা ছাড় করা হবে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসের জন্য ১৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির হিসাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এই সময়ে প্রতি মাসে গড়ে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা হারে ভর্তুকি ছাড় হয়েছে। তবে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে গত ডিসেম্বর থেকে ভর্তুকির পরিমাণ কমে প্রতি মাসে ৩ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
তাতে চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর-জুন সময়ে আরও প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে।
অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের আগস্ট থেকে জুন পর্যন্ত ১১ মাসে এ খাতে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে, যা আগামী অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা মোট অর্থের চেয়েও ৬ হাজার কোটি টাকা বেশি।
অবশ্য গত মাসে রিভিউ করতে আসা আইএমএফ প্রতিনিধিদলের কাছে আগামী জুন মাসে আরেক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ বিভাগ। এরপরেও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, কয়লা ও গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায়ে না কমলে আরেক দফা দাম বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারে সরকার।
আইএমএফের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ঋণ চুক্তিতে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্যুত খাতের ভর্তুকি পুরোপুরি প্রত্যাহার করার অঙ্গীকার করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিদ্যুৎ খাতে এত ভর্তুকির পেছনে ক্যাপাসিটি চার্জ দায়ী কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, কোভিডের আগেও ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হতো। তা সত্ত্বেও তখন ভর্তুকির পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে ছিল।
মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লার দাম বৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বিদ্যুৎ খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকির দায় সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
আইএমএফের কাছে উপস্থাপন করা তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পিডিবির জ্বালানি ব্যয় দাঁড়াবে ৫৫ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। আর ক্যাপাসিটি চার্জ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ব্যয় হবে ৩৭ হাজার ২২২ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট উৎপাদন ব্যয় হবে ৯৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। আর বিদ্যুৎ বিক্রি করে পিডিবির সম্ভাব্য আয় দাঁড়াবে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম কয়েক দফা বাড়ানো হলেও ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণে তা বড় কোনো ভূমিকা রাখছে না। গত ডিসেম্বর থেকে তিন দফা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে বছরে লোকসান কমবে মোট ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা বলেন, টাকার দরপতন এবং জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি এ খাতের বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রেখেছে নতুন উৎপাদনে আসা বড় আকারের বিদ্যুৎকেন্দ্রের উচ্চ ক্যাপাসিটি চার্জ।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমতে থাকায় আগামী অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ কমে আসবে বলে মনে করছেন পিডিবির কর্মকর্তারা। তবে জুলাই থেকে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার আরও দরপতন হলে লোকসান বাড়তে পারে।
পিডিবির হিসাব অনুযায়ী, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান ১ টাকা কমলে তাদের লোকসান বাড়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।