বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাওয়ার রেকর্ড ভারতের

বিশ্বজুড়ে ১৮ মিলিয়ন প্রবাসী ভারতীয় আছেন। তাদের কাঁধে ভর করে রেমিট্যান্স পাওয়ায় রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশটি। খবর কোয়ার্টজ-এর।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে ইতিমধ্যে মোট ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের পেয়েছে ভারত। এর আগে কোনো দেশ এক বছরে এই পরিমাণ রেমিট্যান্স আয় পায়নি।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, 'মজুরি বৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ওইসিডি দেশগুলোতে শক্তিশালী শ্রমবাজারের সুবাদে ভারতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।'
২০২১ সালের তুলনায় এ বছর ভারতের রেমিট্যান্স প্রবাহ ১২ শতাংশ বেড়েছে। দেশটির জিডিপিতে রেমিট্যান্সের অবদান ৩ শতাংশ।
মূলত অভিবাসী শ্রমিকদের আয়ে ভর করেই এই বিশেষ মাইলফলক গড়েছে ভারত। তবে দেশটির রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন রেমিট্যান্সের অর্থে পড়াশোনা করা ভারতীয় অনেক শিক্ষার্থী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুরের মতো বিভিন্ন উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে ভালো চাকরি পেতে শুরু করেছে।
এছাড়া ভারতীয় রুপির অবমূল্যায়নও রেমিট্যান্স বাড়াতে সহায়তা করেছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রাটির দর ১০ শতাংশ কমেছে। এর ফলে গত বছরের তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে টাকা পাঠানোর খরচ ২৬ সতান, থাইল্যান্ড থেকে ১৭ শতাংশ এবং জাপান থেকে ১৪ শতাংশ কমে গেছে।
তবে ২০১৫-র জানুয়ারি থেকে ২০২১-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮ লাখ ৮১ হাজার ২৫৪ জন ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিকত্ব বিসর্জন দিয়েছেন। মহামারি-পরবর্তীকালে কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের মতো দেশগুলো দক্ষ কর্মীদের আকর্ষণে তাদের নীতিমালা শিথিল করায় এই প্রবণতা আরও বেড়েছে।
তবে এ বছর ভারত ও নেপালের প্রবাসী আয় বাড়লেও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের রেমিট্যান্স গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে গেছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার রেমিট্যান্স প্রবাহ এ বছর কমে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে জানানো হয়েছে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে। এর অন্যতম কারণ মহামারিকালে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা বন্ধ করে দেওয়া।
সব মিলিয়ে ২০২২ সালে নিম্ন ও মধ্য-আয়ের দেশগুলোর রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ শতাংশ—যা ২০২১ সালের প্রবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেক।
উল্লেখ্য, এ বছর রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে শীর্ষে রয়েছে ভারত। প্রবাসী আয় গ্রহণে ভারতের পরেই রয়েছে মেক্সিকো, চীন ও ফিলিপাইন। শীর্ষ ১০ রেমিট্যান্স গ্রহীতার তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নামও। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রাপকের তালিকায় এ বছর বাংলাদেশ ৭ম অবস্থানে আছে।